করোনা প্রতিরোধে যে খাবারগুলো প্রয়োজন
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রস্তুতি চলছে আমাদের। শুরু হয়েছে প্রথম পর্বের লক ডাউন। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউ গত বছরের চেয়ে শক্তিশালী। আমরা ইতিমধ্যে দেখতে পাচ্ছি, প্রতিদিন কয়েক হাজার করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়। হাসপাতালগুলোর বেড উপচে পরেছে কোভিড-১৯ এর রোগীতে। ফলে ডাক্তারদেরও সমস্যা হচ্ছে চিকিৎসা সেবা দিতে। ফলে আমাদের নিজেদের সচেতন হওয়া ছাড়া অন্য উপায় আপাতত নেই।
লকডাউনে বাড়িতে থেকেও আমরা শরীরের রোগ প্রতিরোধ বাড়িয়ে নিতে পারি খানিকটা যাতে আক্রান্ত না হই।
প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকা:
- সবজি: করলা (বিটা ক্যারোটিনসমৃদ্ধ), পারপেল/লাল পাতা কপি, বিট, ব্রোকলি, গাজর, টমেটো, মিষ্টি আলু, ক্যাপসিকাম, ফুলকপি।
- শাক: যেকোনো ধরনের ও রঙের শাক।
- ফল: কমলালেবু, মালটা, পেঁপে, আঙুর, আম, কিউই, আনার, তরমুজ, বেরি, জলপাই, আনারস ইত্যাদি।
- মসলা: আদা, রসুন, হলুদ, দারুচিনি, গোলমরিচ।
- অন্যান্য: শিম বিচি, মটরশুঁটি, বিচিজাতীয় খাবার, বার্লি, ওটস, লাল চাল ও আটা, বাদাম।
- টক দই: এটি প্রোবায়োটিকস, যা শ্বাসযন্ত্র ও পরিপাকতন্ত্র সংক্রমণের ঝুঁকি প্রতিরোধ করে। অন্যদিকে শাকসবজি, ফল, বাদামজাতীয় খাবার শরীরে নিউটোভ্যাক্স ভ্যাকসিনের অ্যান্টিবডি প্রক্রিয়াকে উন্নত করে, যা স্টেপটোকোক্কাস নিউমোনিয়া প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
- চা: গ্রিন টি, লাল চায়ে এল-থেনিন এবং ইজিসিজি নামক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা আমাদের শরীরে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অনেক যৌগ তৈরি করে শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
- এ ছাড়া ভিটামিন বি-৬, জিংক-জাতীয় খাবার (বিচিজাতীয়, বাদাম, সামুদ্রিক খাবার, দুধ ইত্যাদি) শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির কোষ বৃদ্ধি করে। তাই এ ধরনের খাবার বেশি খেতে হবে।
- উচ্চ মানের আমিষজাতীয় খাবার (ডিম, মুরগির মাংস ইত্যাদি) বেশি করে খেতে হবে।
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের খুব ভালো কাজ পেতে হলে খাবার রান্নার সময় অতিরিক্ত তাপে বা দীর্ঘ সময় রান্না না করে প্রয়োজনীয় তাপমাত্রায় রান্না করতে হবে।
ওপরের খাবারগুলো ছাড়াও নিউমোনিয়া প্রতিরোধে উচ্চ আমিষযুক্ত খাবার বেশি করে খেতে হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কোষ ও টিস্যু দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে এবং পাশাপাশি নতুন টিস্যু তৈরি হবে। এর সঙ্গে দরকার পর্যাপ্ত ঘুম। অপর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম শরীরে কর্টিসল হরমোনের চাপ বাড়িয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, তাই পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
যে খাবার বাদ দিতে হবে
সব ধরনের কার্বনেটেড ড্রিংকস, বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, তামাক, সাদাপাতা, খয়ের ইত্যাদি। এগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বাধা দিয়ে ফুসফুসে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়, ঠান্ডা খাবার, আইসক্রিম, চিনি ও চিনির তৈরি খাবার (যা ভাইরাসের সংক্রমণে সহায়তা করে)।
এ লেখার উদ্দেশ্য সঠিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে প্রত্যেকের শরীরে রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা উন্নত করতে সহায়তা করা, যাতে শুধু করোনাভাইরাস নয়, সব ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় আপনি শারীরিকভাবে সক্ষম থাকতে পারেন।
করোনা প্রতিরোধে যে খাবারগুলো প্রয়োজন